সোমবার, ০২-অক্টোবর ২০২৩, ০৫:০৮ অপরাহ্ন
  • এক্সক্লুসিভ
  • »
  • সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তো নয়, এ যেন সচিবের ব্যক্তিগত সম্পত্তি!

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তো নয়, এ যেন সচিবের ব্যক্তিগত সম্পত্তি!

shershanews24.com

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১০:২৫ পূর্বাহ্ন

সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজের সৌজন্যে: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তো নয়, এ যেন সচিবের ব্যক্তিগত সম্পত্তি- মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ সচিবের অসুস্থ মায়ের সেবায় ২৪ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ডিউটিতে দেয়ার ঘটনায় যে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে তার মধ্যে অনেকেরই মন্তব্য ছিলো এমন!
সরকারের সচিব পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরকারি গাড়ি এবং সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের নজির আছে অহরহই। কিন্তু মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ যেটি করলেন তা দীর্ঘকাল রেকর্ড হয়ে থাকবে নিঃসন্দেহেই। 
প্রত্যেকের মনে নিজের মায়ের জন্য দরদ থাকুক এবং বেশি দরদ থাকুক, এটা সবাই কামনা করেন। সচিব তার মায়ের প্রতি অত্যন্ত যতœশীল, এজন্য তিনি অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার দাবি রাখেন। তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বা সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ব্যবহারকে কেউই সমর্থন করবেন না নিশ্চয়ই। এমনকি সচিবের মা বয়ষ্ক মানুষ হিসেবে তিনি যদি নিজের আখেরাতের কথা ভাবেন তাহলে তিনিও নিশ্চয়ই সরকারি মানবসম্পদ বা আর্থিকসম্পদের অপব্যবহার চাইবেন না। কিন্তু মায়ের অসুস্থতায় ডিউটি করার দায়িত্ব তো সচিবের নিজেরই। তিনি কি করোনার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডে চিকিৎসারত নিজের মায়ের শিয়রে বসে ডিউটি করেছিলেন কিছুক্ষণের জন্য? না করেননি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি কিছুক্ষণের জন্যও ডিউটি করেননি। ডিউটি করা দূরের কথা, এক পলক মায়ের চেহারাটা দেখার জন্যও সেখানে ঢোকেননি। সচিবের অনুপস্থিতিতে বা ব্যস্ততায় তার স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, পুত্রবধুর ডিউটি করার কথা। এরা কি আদৌ এই সময় হাসপাতালে গিয়ে কেউ ডিউটি করেছেন? খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তাদের কেউই ডিউটি করেননি। একটি বারের জন্যও সেখানে ঢোকেননি। শুধু মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ দফতরগুলোর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকেই করোনার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিটে ডিউটি করতে হয়েছে পালাক্রমে। তাও নিজেদের আত্মরক্ষার যথাযথ প্রোটেকশন না নিয়ে দৈনন্দিন সাধারণ পোশাকেই। মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং দফতর-অধিদফতরগুলোর মোট ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ডিউটি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিলো। এই ডিউটিগুলো তদারক করছিলেন সচিবের পিএস আজিজুল ইসলাম।
করোনা আক্রান্ত হয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদের মা। সচিবের মায়ের সেবায় নিয়োজিত রাখা হয়েছিল এক উপসচিবসহ ২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের লিখিত নির্দেশনা দিয়ে তিন দিনের জন্য চার শিফটে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়।
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর সর্বমহলে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। সচিবের মায়ের সেবায় হাসপাতালে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব দেওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।  
তবে সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজের অনুসন্ধানে যে ভয়াবহ তথ্যটি উঠে এসেছে তা হলো, সচিব রওনক মাহমুদের মা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। যেটিকে ‘হাই রিস্ক কোভিড-১৯ ইউনিট’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। এখানে মোট বেড আছে ৫০টি। তারমধ্যে ৮টি বেড আইসিইউ। সচিব রওনক মাহমুদের মা আইসিইউ’র ২নং বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যেখানে ডাক্তার-নার্স ছাড়া অন্য কারো ডিউটি দেয়ার সুযোগ নেই। পিপিই অর্থাৎ নিজের শারীরিক সুরক্ষা ছাড়া কারো সেখানে ঢোকারই অনুমতি নেই।
অথচ সেখানে সচিবের মায়ের শিয়রে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগাতার পালাক্রমে ডিউটি করতে হয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অধীন দফতরগুলোর অসহায়-হতভাগা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো রকমের সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াই দৈনন্দিন সাধারণ ড্রেসে! এমনটি ভাবা যায়? কিন্তু সেটিই ঘটেছে।
খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজের পরিবারের সদস্যদের কেউ, এমনকি নিকটজন কেউও করোনা আক্তান্ত হলে সেখানে ডিউটি করা দূরের কথা, দেখতে পর্যন্ত যান না। নিজের করোনা আক্রান্তের ভয়ে কারো জানাজা পড়তে পর্যন্ত যান না। গণমাধ্যমে প্রায়ই এমন খবর প্রকাশিত হয়, করোনা আক্রান্ত মা-বাবার কাছ থেকে দূরে থেকেছেন নিজের আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে। এমনকি কেউ কেউ করোনা আক্রান্ত মা-বাবাকে বাইরে ফেলে দিয়ে এসেছেন, এমন খবরও দেখা গেছে। 
আর সেখানে হাই রিস্কের ইউনিটে চিকিৎসারত করোনা আক্রান্ত সচিবের মায়ের শিয়রে বসে ডিউটি করতে হয়েছে এই অসহায়-হতভাগা কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে শুধুমাত্র নিজের চাকরি রক্ষার খাতিরে! মন্ত্রণালয় থেকে দাবি করা হয়েছে, এই ২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সচিবের মায়ের ডিউটির জন্য কোনো অফিস আদেশ হয়নি। বাস্তবেও অবশ্য তাই। কারণ, এ ধরনের অফিস আদেশ দেয়ার আদৌ কোনো সুযোগ নেই। সরকারের অফিসগুলোতে সবকিছুই যে অফিস আদেশে ঘটে তা কিন্তু নয়। অফিস আদেশের বাইরে মৌখিক কথাবার্তাই মূলত ভয়াবহ ঘটনাগুলো ঘটে থাকে। এখানে তেমনটিই ঘটেছে।
তবে এখানে লিখিত, স্বাক্ষরবিহীন ডিউটি রোস্টার করে দেয়া হয়েছিল। পুরো বিষয়টি সমন্বয় করছিলেন সচিবের পিএস আজিজুল ইসলাম।
ডিউটির বিষয়ে নির্দেশনায় বলা হয়, সচিবের মায়ের সার্বিক অবস্থা সার্বক্ষণিক জানাতে হবে পিএসকে, চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ, টেস্ট করানোর ও তা দ্রæত সংগ্রহ করা এবং হোয়াটসঅ্যাপে সচিবের পিএসকে রিপোর্টের কপি পাঠাতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকতে হবে রোগীর কাছাকাছি, রোগীর এটেন্ডেনের কাছে জানান দিতে হবে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, সোমবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের সিস্টেম এনালিস্ট মো. ইলিয়াস হোসেন ও অফিস সহায়ক মো. জাহিদুল ইসলাম, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আসলামুল আলাম, ট্রেইনি সহকারী মো. সানোয়ার হোসেন, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের (ডিএলএস) অ্যানিমেল প্রোডাকশন অফিসার আলী রেজা আহমেদ ও ল্যাব টেকনেশিয়ান বিভূ চন্দ, রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত মৎস্য অধিদফতরের (ডিওএফ) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রেইনি সহকারী সানোয়ার হোসেন দায়িত্ব পালন করবেন।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ডিওএফের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা মো. রাশেদ পাভেজ এবং অফিস সহায়ক মো. নাজির হোসেন পারভেজ, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিএলআরআইয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আসলামুল আলাম, ট্রেইনি সহকারী মো. সানোয়ার হোসেন, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত প্রোগ্রামার নূর মোহাম্মদ ও অফিস সহায়ক মো. আব্দুল কাদের, রাত ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডিএলএসের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ফারুক মিয়া ও ল্যাব টেকনেশিয়ান মো. শহিদ উল্যাহ দায়িত্ব পালন করবেন।
বুধবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপ-সচিব পুলকেশ মন্ডল ও ট্রেইনি সহকারী জগদীশ চন্দ্র দাস, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিএলআরআইয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আসলামুল আলাম ও ট্রেইনি সহকারী মো. সানোয়ার হোসেন, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ডিওএফের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম পাটওয়ারী ও অফিস সহায়ক মো. মফিজ হোসেন, রাত ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডিএলএসের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এসএম নিয়াজ মোর্শেদ ও ল্যাব টেকনেশিয়ান জিএম শাহিনুর ইসলাম দায়িত্ব পালন করবেন।
গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে লিখিত কোনো নির্দেশনা দেননি বলে দাবি করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ। তবে তিনি প্রকাশিত খবরকে একেবারেই অস্বীকার করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমার মায়ের বয়স ৯৫ বছর। আমার অসুস্থ মাকে অফিসের লোকজন দেখতে যাচ্ছে- সেটি নিয়েও আপনারা নিউজ করছেন। এখন কী করা যাবে?’
অবশ্য, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ এবং তা নিয়ে সর্বমহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাবার পর থেকে সচিব রওনক মাহমুদের মায়ের কাছে আর কেউ যাননি। নিয়ম অনুযায়ী ডাক্তার-নার্সরাই ডিউটি করে থাকেন। সেখানে অন্য সাধারণ কারো ডিউটি করার প্রয়োজন হয় না। বাইরের কারো ডিউটি করার সুযোগও নেই। এ ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধও রয়েছে। 
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সচিবের মায়ের পাশে অন্য সাধারণ ব্যক্তিদের ডিউটি দেয়ার ক্ষেত্রে তারা বাধা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি সচিবের প্রভাবের কারণে। 
উল্লেখ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ প্রশাসনের ৮৬ ব্যাচের কর্মকর্তা। শিক্ষা জীবনে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। ছাত্রলীগ এবং কৃষিবিদ-এই দুটো পরিচয় বর্তমানে সরকারি প্রশাসনে এলিট শ্রেণী হিসেবে পরিচিত। বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশাসন এরাই মূলত দাবড়ে বেড়িয়েছেন। দেখা গেছে, অন্য যোগ্যতা থাকুক আর না-ই থাকুক, একসঙ্গে ছাত্রলীগ-কৃষিবিদ পরিচয় যার আছে তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী। পদোন্নতি-পদায়নে বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে লাগামহীন অপকর্ম-দুর্নীতি করার সুযোগ পেয়েছেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ এরই অন্যতম নজির। তিনি এ মন্ত্রণালয়ের সচিব থাকাকালে গত কয়েক বছরে অনেক দুর্নীতি-অপকর্ম করেছেন। লোক নিয়োগ এবং বদলি-পদায়নে অনিয়ম, মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক লুটপাট, পিডি নিয়োগে ভয়াবহ অনিয়মসহ হেন কোনো অপকর্ম নেই যে, তিনি করেননি। নিজের ছেলের বউকেও দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি দিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অধীন প্রকল্পে। 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সচিবের এই পুত্রবধূর নামে আদিবা ফারিহা। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরে মনিটরিং অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। অফিসে যাতায়াতে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সরকারি পাজেরো স্পোর্টস গাড়ি ব্যবহার করেন তিনি। যা বিলাসবহুল এবং ভিআইপি গাড়ি হিসেবেই পরিচিত। যদিও প্রাপ্যতা অনুসারে অধিদফতরের একজন সাধারণ মনিটরিং অফিসার কোনো সরকারি গাড়ি প্রাপ্য নন। সচিবের পুত্রবধু হওয়ার যোগ্যতায় তিনি এটি দখল করেছেন। 
অফিসে যাতায়াতের জন্য অবৈধভাবে সরকারি এমন বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করলেও বস্তুত তিনি নিয়মিত অফিসেই আসে না। মাঝেমধ্যে আসেন, কিন্তু অফিসের কোনো হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন না। যেদিন আসেন তাও সকালে অফিস টাইমে নয়, ১১/১২টার দিকে অফিসে আসেন, টুকটাক কিছু কাজ করে কিছুক্ষণ থেকে চলে যান। গত বছর প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অধীন প্রকল্পে চাকরি হয় আদিবা ফারিহার। এই পদের জন্য অনেক যোগ্যতা- অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি আবেদন করেছিলেন। আদিবা ফারিহার প্রধান যোগ্যতা হলো, তিনি সচিবের পুত্রবধূ। আর এই যোগ্যতায়ই তিনি অন্য সবাইকে ডিঙিয়ে নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছে!
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবেই নয়, ইতিপূর্বে যেসব পদায়নে ছিলেন প্রায় প্রত্যেকটি কর্মস্থলেই ব্যাপকহারে দুর্নীতি-অনিয়মে জড়িয়েছেন। এ মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে আসার আগে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং কারিগরি শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক পদে ছিলেন। একসঙ্গে এ দু’টি পদে ছিলেন দীর্ঘদিন। যেখানে শত শত অতিরিক্ত সচিব পদের অভাবে বসার জায়গা পাচ্ছেন না সেই পরিস্থিতিতে একজন অতিরিক্ত সচিবের একসঙ্গে দুটো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাটা বড় ক্ষমতার দাপটের ব্যাপার নিঃসন্দেহেই! শুধু তাই নয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরে রওনক মাহমুদ অনেক দুর্নীতি-অপকর্ম করেছেন মর্মে সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজের কাছে তথ্য এসেছে ইতিমধ্যে।
(সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজে ৩০ আগস্ট ২০২১ প্রকাশিত)