shershanews24.com
বিশ্ব নেতাদের গোপন সম্পদ ও লেনদেনের তথ্য ফাঁস! প্যানডোরার বাক্স খুলতেই হইচই
সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১ ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
shershanews24.com

shershanews24.com

সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজের সৌজন্যে:  গ্রিক উপকথার প্যানডোরার বাক্স খোলার মতোই এক এক করে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে বিশ্বের প্রভাবশালীদের গোপন সম্পদের খবর। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কর ফাঁকি দিচ্ছেন স্বয়ং রাষ্ট্রপ্রধানরাই। ৩৫ জন সাবেক ও বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকারপ্রধান এই দোষে দোষী বলে দাবি করছে ফাঁস হওয়া প্যানডোরা পেপারসের রিপোর্টে। ‘প্যানডোরার নথিপত্র’ নামে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, কর ফাঁকি দিতে রাষ্ট্রপ্রধানরা বিদেশি অ্যাকাউন্টে ভিন্ন পথে অর্থ চালান করছেন। একইভাবে বিদেশে বেনামে বহুমূল্যের বাড়ি এবং সম্পদ কিনেছেন। তালিকায় নাম আছে, শচীন টেন্ডুলকারের মতো নামী ক্রিকেটারেরও। গোটা পৃথিবীর ১৩০ জন বিলিয়োনিয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ সামনে এসেছে। আর এ ঘটনা ফাঁস হওয়ায় বিশ^জুড়ে হইচই পড়ে গেছে। 


ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট বা সংক্ষেপে আইসিইজে একটি মঞ্চ। বিশ্বের ১১৭টি দেশের ৬০০ জনের বেশি বিশিষ্ট সাংবাদিক এই মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত। যুক্ত বিশ্বের ১৫০টি সংবাদ সংস্থাও। বিশ্বের মোট ১৪টি আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার কাছ থেকে ১ কোটি ১৯ লাখ নথি প্রকাশ্যে এনেছেন সাংবাদিকেরা। তাদেরই উদ্যোগে বিশ্বের বৃহত্তম স্টিং অপারেশন বা অনুসন্ধানী অপারেশন সংঘটিত হয়েছে, যার নাম ‘প্যানডোরা পেপারস’। আর সেখানেই উঠে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।


গত কয়েক দশকে ‘প্যানডোরা পেপারস’ সবচেয়ে বড় আর্থিক দুর্নীতির স্টিং অপারেশন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই নথি ফাঁস বিশ্বের রাজনীতি ও কূটনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করছেন অনেকে। গত সাত বছর ধরে ফিনসেন ফাইলস, প্যারাডাইস পেপার্স, পানামা পেপার্স ও লাক্সলিকসের প্রতিবেদনে অনেকের গোপন সম্পদের তথ্য ফাঁস হয়। এই প্যানডোরা পেপার্স হচ্ছে তার সবশেষ ঘটনা।
‘প্যানডোরার নথিপত্র’ দেখিয়েছে, কীভাবে কর ফাঁকি দিয়ে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বিদেশি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মালিবু, ক্যালিফোর্নিয়া, ওয়াশিংটন ও লন্ডনে ১০ কোটি ডলারের সম্পত্তি কিনেছেন। চেক প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বাবিস, যিনি এই সপ্তাহেই ভোটে দাঁড়াতে চলেছেন, তিনি কেন তার বিপুল বিদেশি সম্পত্তির হিসাব দেখাতে পারেননি তা জানা গেছে। এছাড়া দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রনেতাদের তালিকায় রয়েছেন আজারবাইজান, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও।


প্যানডোরা পেপারস কেলেঙ্কারিতে পানামা, দুবাই, মোনাকো, সুইজারল্যান্ড ও ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া দ্বীপপুঞ্জের মতো বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের একাধিক কোম্পানিতে প্রভাবশালীরা যে অর্থ রেখেছেন ও গোপন লেনদেন করেছেন সেসব তথ্য ফাঁস করা হয়। এসব নথিতে অফশোর কোম্পানিতে নিয়োগকারী হিসেবে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ, সাবেক ব্রিটিশপ্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের নামও। গোপন লেনদেনের তালিকায় আছেন চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বেবিজ, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির জেলেনস্কির নামও।এদিকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপক্ষের দুই আত্মীয়ের নাম রয়েছে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া প্যানডোরা পেপারসে। এই দুজন হলেন-তাঁদের চাচাতো বোন নিরুপমা রাজাপক্ষে ও তাঁর স্বামী থিরুকুমার নাদেসান।  
ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো বোন নিরুপমা রাজাপক্ষে ও তাঁর স্বামী থিরুকুমার শেল কোম্পানির মাধ্যমে লন্ডন ও সিডনিতে বিনিয়োগ ও বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন।
আইসিআইজের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ‘গোপনে নাদেসান অন্য শেল কোম্পানি ও ট্রাস্ট গঠন করেছে। শ্রীলঙ্কা সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করতে বিদেশি কোম্পানি থেকে লোভনীয় কাজের প্রস্তাব পেতে এবং শিল্পকর্ম কিনতে তিনি এ কোম্পানিগুলো ব্যবহার করতেন।’

সিঙ্গাপুরভিত্তিক অফশোর সার্ভিস প্রোভাইডার এশিয়াসিটি ট্রাস্টের কাছে পাঠানো গোপন ই-মেইলে নাদেসান জানিয়েছিলেন ২০১১ সাল নাগাদ তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি ডলারের বেশি। তবে স্বতন্ত্রভাবে এ তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি আইসিআইজে। দীর্ঘসময় ধরে নাদেসানের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছে এশিয়াসিটি ট্রাস্ট।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্যাসিফিক কমোডিটিজ নামের একটি শেল কোম্পানি ২০১৮ সালে জেনেভা ফ্রিপোর্ট নামের গুদামে ৩১টি চিত্রকর্ম ও আরও কিছু দক্ষিণ এশীয় আর্ট পিস স্থানান্তর করেছিল। প্যানডোরা পেপারসের তথ্য অনুযায়ী, নাদেসান এই প্যাসিফিক কমোডিটিজ কোম্পানির সঙ্গে জড়িত। 
এশিয়াসিটি ট্রাস্ট নাদেসানের অফশোর কোম্পানি ও ট্রাস্টগুলোর কোনো কোনোটির ব্যবস্থাপনার কাজ করত। এসব কোম্পানির সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। নিরুপমা রাজাপক্ষে ও নাদেসান দুজনই তাঁদের ট্রাস্ট ও কোম্পানির ব্যাপারে আইসিআইজের প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
 

তালিকায় শচীন টেন্ডুলকার ও অনিল আম্বানিসহ ৩০০ ভারতীয়
স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য ভারতে বিশেষ নাম আছে ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের। তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা বলেন, যুবসমাজের ক্ষতি হতে পারে এমন বিজ্ঞাপনও তিনি করতে রাজি হন না। ৯১টি দেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতার নামের সঙ্গে সেই শচীনের নাম উঠে এসেছে প্যানডোরা পেপারস দুর্নীতিতে। আইসিআইজে যে রিপোর্ট পেশ করেছে, তাতে ব্যবসায়ী অনিল আম্বানিসহ ৩০০ ভারতীয় এবং সংস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, শচীন যাদের মধ্যে এক জন। এছাড়া অন্তত ৬০ জন পরিচিত ব্যক্তির নাম আছে।


শচীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া দ্বীপে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন, যা আইন মোতাবেক বেআইনি। পানামা দুর্নীতির কাগজ বাইরে আসার পর শচীন সেই বিনিয়োগ লিকুইডেট (ভাঙিয়ে ফেলা) করেছিলেন বলে অভিযোগ। পুরো প্রক্রিয়াটিই অবৈধভাবে করা হয়েছিল। শচীনের আইনজীবী অবশ্য এ কথা অস্বীকার করেছেন।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, শচীন বিদেশের মাটিতে যে বিনিয়োগ করেছিলেন, তা ভারতের কর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই করা হয়েছিল। বিনিয়োগ ভাঙানোর পরেও তার জন্য প্রয়োজনীয় ভারতীয় কর দেওয়া হয়েছিল। সমস্ত ফাইলই তৈরি আছে। যদিও প্যানডোরা পেপারসের সঙ্গে জড়িত সাংবাদিকদের বক্তব্য, শচীনের বিরুদ্ধে তাদের হাতেও তথ্য প্রমাণ আছে।
 

পাকিস্তানের ৭০০ জনের নাম
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠজনসহ পাকিস্তানের ৭০০ জনের নাম তালিকায় উঠে এসেছে। এর মধ্যে অর্থমন্ত্রী শওকত তারিন ও সিনেটর ফয়সাল ভাওদা রয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন মিডিয়ার মালিক, ব্যবসায়ী, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা কর ফাঁকি দিয়েছেন বলে নথিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। জং গ্রুপ এডিটর ইন চিফ মীর শাকিলুর রেহমান, ডনের প্রধান নির্বাহী হামিদ হারুন এবং এক্সপ্রেস মিডিয়া গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সুলতান আলী লখনৌ রয়েছেন।
প্যানডোরা পেপারস নাম দিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায় নথিপত্রে রুশপ্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, চেক প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বাবিজ এবং জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহসহ ৩৫ জন সাবেক নেতার সমুদ্র তীরবর্তী বাড়ির মালিকানার তথ্য রয়েছে। পাঁচ বছর আগে তদন্ত সাংবাদিকেরা পানামা পেপার নামে সমুদ্র তীরবর্তী সম্পত্তির বিষয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন সেই সময়ের চেয়ে এই প্রতিবেদনে দ্বিগুণের বেশি অ্যাাকাউন্টের তথ্য রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা রাশিয়ার শাসকদের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন যা যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ক্ষতিকর বলে মনে করে। প্যানডোরা পেপারে দেখা গেছে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তারা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কৌশলে সম্পদগুলোকে ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করেছেন।
 

জর্দানের বাদশাহ আবদুল্লাহর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি 
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র জর্দানের বাদশাহ আবদুল্লাহ অফশোর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিলাসবহুল বাড়ি ক্রয়ে ১০ কোটি ডলারের বেশি ব্যয় করেছেন। ‘অফশোর’ অর্থ হচ্ছে বিনিয়োগকারী যে দেশের তা থেকে আলাদা কোনো দেশে কোম্পানি গঠন, যেখানে খুব কম বা শূন্য আয়করের সুবিধা পাওয়া যায়। তবে লন্ডন থেকে জর্দানের বাদশাহর পক্ষে ডিএলএ পাইপার নামে ল অফিস জানায়, তাঁর জমি-বাড়িগুলো ব্যক্তিগত সম্পদ দিয়েই কেনা এবং সাধারণত এ রকম উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের সম্পত্তি অফশোর কম্পানির মাধ্যমেই কেনা হয় নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে।
আগামী ৮-৯ অক্টোবর চেক রিপাবলিকের পার্লামেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে। প্রকাশিত নথিতে অভিযোগ করা হয়, দেশটির প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই বাবিসের দুই কোটি ২০ লাখ ডলারের সম্পত্তি রয়েছে ফ্রান্সে।
লন্ডনে একটি অফিস কেনার সময় সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তাঁর স্ত্রী শেরি ব্লেয়ারের তিন লাখ ১২ হাজার পাউন্ডের কর ফাঁকি দেওয়ার তথ্য প্যানডোরার নথিতে এসেছে। তারা একটি অফশোর ফার্ম কিনেছিলেন, যার মালিকানায় ছিল ওই ভবনটি।

আজারবাইজানের ক্ষমতাসীন অলিয়েভ পরিবারের দুর্নীতি
আজারবাইজানের ক্ষমতাসীন অলিয়েভ পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অর্থ লুকাতে এই পরিবার একটি বিশাল অফশোর নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এই পরিবার এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা যুক্তরাজ্যে ৪০ কোটি পাউন্ডের সম্পত্তি কেনা-বেচায় কিভাবে জড়িত, তা উঠে এসেছে।তালিকায় রয়েছেন কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা ও তাঁর পরিবারের ছয় সদস্য, যাদের অফশোর কোম্পানি আছে। গোপন সম্পদ এবং লেনদেনের তালিকায় আরো আছেন সাইপ্রাস ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
 

প্যানডোরা পেপারস: অভিযুক্ত বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া
অনেক বিশ্ব নেতাই তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কোনো কোনো নেতা আবার এটাকে অপরাধ বলতে নারাজ। সব ভিত্তিহীন বলেও উড়িয়ে দিয়েছেন অনেকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং জর্ডানের বাদশাহ বিবৃতি জারি করে বলেছেন তারা কোনো ভুল করেননি।


জর্ডানের রাজপ্রাসাদ থেকে বলা হয়েছে, বাদশাহ আবদুল্লাহর বিদেশে যে সম্পদ রয়েছে তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও ফাঁস হওয়া তথ্যের কড়া সমালোচনা চলছে জর্ডানে। ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা গেছে, জর্ডানের বাদশাহর গোপনে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে ১০ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অসম্পূর্ণ বলে উড়িয়ে দেন। বলা হয় এ ফাঁস হওয়া তথ্যর কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সেখানে পুতিনের অভ্যন্তরীণ কোনো লুকানো সম্পদ দেখিনি।


এর আগে প্যানডোরা পেপারসে ফাঁস হয়, মোনাকোয় পুতিনের বান্ধবীর একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে একটি গোপন লেনদেনের মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাট কেনা হয়।
প্যানডোরা পেপারসে নাম আসা চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বাবিস নিজের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে টুইট বার্তায় বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টি করতেই এসব সামনে আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি ভুল অথবা অবৈধ কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত নই। তবে ফাঁস হওয়া নথিতে তার বিরুদ্ধে ফ্রান্সে দুইটি বাড়ি কেনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্যানডোরা পেপারসে নাম আসা চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিয়েরাও নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার অফিস থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। তিনি একজন সম্পদশালী ব্যবসায়ী, যার বিরুদ্ধে শৈশবের এক বন্ধুর কাছে পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় একটি তামা এবং লোহার খনি বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে প্যানডোরা পেপারসে নাম আসা নাগরিকদের বিষয়ে তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ফাঁস হওয়া নথিতে ইমরান খানের মন্ত্রিসভার সদস্যসহ শত শত পাকিস্তানি নাগরিকের নাম উঠে এসেছে যারা অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে গোপনে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। কোনো ধরনের অপরাধ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা বলেছেন তিনি।

আইসিআইজি বলছে, বিশ্ব অর্থনীতির ১০ শতাংশ পাচার হয়েছে কয়েক ডজন ‘ট্যাক্স হেভেন’ অর্থাৎ প্রায় কর-বিহীন অঞ্চলে নিবন্ধিত হাজার হাজার কাগুজে কোম্পানির খাতায় জমা হচ্ছে। পরিণতিতে এসব দেশের সরকার বছরে কম বেশি ৮০,০০০ কোটি ডলার আয়কর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু কোথায় এসব ট্যাক্সহেভেন? কীভাবে গজায় হাজার হাজার এসব ‘শেল‘ অর্থাৎ খোলস-সর্বস্ব কোম্পানি? কিভাবে গোপন থাকে বিনিয়োগের নামে পাচার করা অবৈধ টাকার পাহাড়?
 

ট্যাক্স হেভেনের পরিধি
পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কর ফাঁকির সব নিরাপদ আস্তানা। এর ভেতর রয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম কিছু দেশও যেমন-পানামা, নেদারল্যান্ডস, মাল্টা, মরিশাস। সেইসাথে রয়েছে কয়েকটি দেশের অভ্যন্তরে কিছু অঞ্চল-যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার বা ওয়াইয়োমিঙ অঙ্গরাজ্য।আবার কোন কোন দেশ তাদের মূল ভূখ-ের বাইরে কিছু অঞ্চলকে এমন ট্যাক্স হেভেন করে রেখেছে -যেমন ব্রিটিশ শাসিত ক্যারিবীয় দ্বীপ ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ বা কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জ।

এখন থেকে পাঁচ বছর আগে ‘পানামা পেপারস’ নামে কর ফাঁকি নিয়ে ফাঁস হওয়া নথিপত্রে দেখা গিয়েছিল যে পানামা-ভিত্তিক একটি আইন প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে হাজার হাজার শেল কোম্পানি নিবন্ধনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল।

এক হিসাবে, বিশ্বের ৬০টির মত দেশ এবং অঞ্চল রয়েছে যেখানে এসব খোলস’ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এসব জায়গায় কোম্পানি করের হার খুবই কম। অনেক জায়গায় কর একবারেই দিতে হয় না। অবৈধ সম্পদ গোপন রাখতে বা কর ফাঁকির জন্য লাখ লাখ মানুষ যখন এসব খোলস কোম্পানি খোলেন, তখন তাদের কাছ থেকে ওই সব দেশ বা অঞ্চলের সরকার অনেক ফি পায়। প্রচুর আইনজীবী, অ্যাকাউনটেন্ট বা পরামর্শকের কাজের সুযোগ তৈরি হয়।

কারা ট্যাক্স হেভেন ব্যবহার করেন?
এক কথায় এর উত্তর হলো, বিশ্বের ধনী লোকজন। কিন্তু একইসাথে অনেক মানুষ যারা ব্যাংকের ঋণ ফেরত দিতে বা কারো পাওয়া শোধ করতে চান না, তারাও তাদের টাকা-পয়সা ট্যাক্স হেভেনগুলোতে নেওয়ার চেষ্টা করেন। একইসাথে সাথে রয়েছে ঘুষখোর, মাদক ব্যবসায়ী বা অস্ত্র চোরাচালানে জড়িত লোকজন-যারা তাদের অবৈধ আয় গোপন রাখতে উন্মুখ।
 

আমদানি রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচার হয় যেভাবে
তবে বড় বড় অনেক বহুজাতিক কোম্পানি যারা বিশ্বজুড়ে লেনদেন করে, তারাও কর ফাঁকির জন্য ট্যাক্স হেভেনে ভিন্ন নামে সহযোগী বিভিন্নপ্রতিষ্ঠান খোলে বলে বহু প্রমাণ পাওয়া গেছে। কাগজে-কলমে ভাগ হয়ে যায় ব্যবসার লেনদেন ও মুনাফা এবং তাতে করে মূল কোম্পানির করের পরিমাণ কমে যায়। নাইকি বা অ্যাপেলের মত কোম্পানির বিরুদ্ধেও ট্যাক্স হেভেন ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, এ সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণও ফাঁস হয়েছে।
 

শেল বা খোলস-সর্বস্ব কোম্পানি
বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেনে নিবন্ধিত এসব নাম-সর্বস্ব কাগুজে কোম্পানি আদতে কোনো ব্যবসা না করলেও আইনের চোখে এগুলো বৈধ। এসব কোম্পানিতে সার্বক্ষণিক কোন কর্মী নেই। এমনকি অধিকাংশ কোম্পানির কোনো অফিসও নেই। যেমন, আইসিআইজি‘র গত বছরের এক রিপোর্টে বলা হয় যে কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জে একটি ভবনেই ছিল ১৯ হাজার কাগুজে কোম্পানির ঠিকানা। এসব কোম্পানির নথিপত্রে মূল মালিকদের কোনো নাম ঠিকানা নেই। কিন্তু পর্দার আড়ালে থেকে তারাই এগুলোতে বিনিয়োগ করা অর্থ লেনদেন করেন। তারাই কোম্পানির নামে নানা দেশে জমি-জমা ঘরবাড়ি কেনেন, শেয়ার বাজারে টাকা খাটান। তাদের সাহায্যের জন্য রয়েছে বহু আইনজীবী বা আ্যাকাউনটেন্ট। মোটা ফিয়ের বিনিময়ে তারাই এসব ক্ষেত্রে বুদ্ধি জোগান, কাজ করে দেন।অনেক ক্ষেত্রে কোম্পানি খোলার খরচ অবিশ্বাস্যরকম কম আর জটিলতা নেই বললেই চলে।


আইসিআইজি‘র এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘কোম্পানি খোলা এতই সহজ যে একটি ইমেল বা একটি ফোনকলেই কাজ হয়ে যায়।’খরচ ও কাগজপত্র বা সই-সাবুদের সংখ্যা নির্ভর করে কোথায় কোম্পানি খোলা হচ্ছে এবং কোন আইনজীবী এ কাজটি করে দিচ্ছেন তার ওপর। যেমন-‘পানামা পেপারস’ কেলেঙ্কারি ফাঁসের জেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া পানামা-ভিত্তিক আইনজীবী প্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকা কোম্পানি প্রতি ফি নিতো ৩৫০ ডলার। তবে আইনজীবীদের এ ফি দু’হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। টাকা পাচার নিয়ে লেখা বই সিক্রেসি ওয়ার্ল্ডেরলেখক জেক বার্নস্টেইন এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন দৈনিক বিজনেস ইনসাইডারকে বলেছেন, অনেক ট্যাক্স হেভেনে এমন আইনও রয়েছে যে কোম্পানি মালিকের নাম পরিচয় প্রকাশ করা যায় না।
 

কেন বন্ধ হচ্ছে না এই প্রতারণা?
আইসিআইজির বেন হলম্যান লিখেছেন, বিশ্বের প্রভাবশালী কিছু দেশ এ ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে থাকছে। এমনকি প্রবণতা টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতাও করছে। যেমন- ব্রিটিশ শাসিত একাধিক ক্যারিবীয় দ্বীপ বিশ্বের প্রধান সব ট্যাক্স হেভেন। সেসব জায়াগায় নিবন্ধিত কোম্পানির নামে লন্ডনে জমি-বাড়ি কেনাকাটা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্য যেমন ডেলাওয়ার, ওয়াইয়োমিঙ, নেভাডা, সাউথ ডাকোটাও ট্যাক্স হেভেন হিসাবে পরিচিত। কোম্পানি করের হার এসব রাজ্যে খুবই কম। বিদেশ থেকে কে এখানে টাকা এনে কোম্পানি খুললো এবং কোথায় তা খাটালো, তা নিয়ে এসব রাজ্যের তেমন মাথাব্যথা নেই। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক হিসাবই বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বছরে কমবেশি ৩০ হাজার কোটি ডলার যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হয়ে আসছে।
৩৩৬ রাজনীতিক, কে কোন দেশের?
প্যানডোরা পেপারস দেখিয়েছে কীভাবে বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশ ও ভূখন্ডের ৩০০ রাজনীতিক অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে গোপনে দেশের বাইরে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
রাষ্ট্রপ্রধান: ১. জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বিন আল-হুসাইন, ২. ডোমিনিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট লুইস আবিনাদের, ৩. আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, ৪. মন্টিনিগ্রোর প্রেসিডেন্ট মিলো শুকানোভিস, ৫. কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা, ৬. ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গিলার্মো লাসো, ৭. কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ডেনিস সাসো এনগুয়েসো, ৮. গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট আলী বনগো অনডিম্বা, ৯.চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা, ১০. কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল-থানি, ১১. ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভøালাদিমির জেলেনোস্কি।
সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান : ১. প্যারাগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোরাসিও কার্টেস, ২. কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সিজার গাভিরিয়া, ৩. পেরুর সাবেকপ্রেসিডেন্ট পেদ্রো পাবলো কুকজিনস্কি, ৪. হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট পোরফিরিও লোবো সোসা, ৫. পানামার সাবেক প্রেসিডেন্ট রিকার্ডো মার্টিনেলি, ৬. কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ পাস্ত্রানা, ৭. পানামার সাবেক প্রেসিডেন্ট আর্নেস্তো পেরেজ বাল্লাডারেস, ৮. পানামার সাবেক প্রেসিডেন্ট জুয়ান কার্লোস ভেরেলা।
বর্তমান সরকার প্রধান : ১. আইভরি কোস্টের প্রধানমন্ত্রী প্যাট্রিক আচি, ২. চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বাবিস, ৩. সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের আমির শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, ৪. লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি।
সাবেক সরকার প্রধান : ১. যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, ২. ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনি, ৩. হংকংয়ের সাবেক প্রধান নির্বাহী তুং চি-ওয়া, ৪. হংকংয়ের সাবেক প্রধান নির্বাহী লিউং চুন-ইং।
রাজনীতিক : ১. হন্ডুরাসের রাজধানী টেগুসিগাল্পার বর্তমান মেয়র নাসরি আসফুরা, ২. জেরুজালেমের সাবেক মেয়র এবং নেসেটের বর্তমান সদস্য নীর বরকত, ৩. ব্রাজিলের সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট রবার্তো ক্যাম্পোস নেটো, ৪. মেক্সিকোর যোগাযোগ ও পরিবহন মন্ত্রী জর্জ আর্গানিস দিয়াজ লিয়াল, ৫. আর্জেন্টিনার সাবেক প্রেসিডেন্ট মরিসিও ম্যাক্রির পরামর্শক জাইম ডুরান বারবা, ৬. ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী পাওলো গুয়েডেস, ৭. নেদারল্যান্ডসের অর্থমন্ত্রী এবং ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক আপিলের নেতা ওপকে হোয়েকস্ত্রা, ৮. বেলগ্রেডের সাবেক মেয়র ও অর্থমন্ত্রী সিনিসা মালি, ৯. আর্জেন্টিনার সাবেক ফার্স্ট লেডি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট কার্লোস মেনেমের মেয়ে জুলেমা মারিয়া ইভা মেনেম, ১০. আর্জেন্টিনার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেস্টর কিরচনার সচিব ড্যানিয়েল মুনোজ, ১১. ইসরায়েলের সাবেক ভাইস প্রধানমন্ত্রী ও নেসেটের সাবেক সদস্য হাইম রামন, ১২. মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ম্যানুয়েল লোপেল ওব্রাডোরের সাবেক উপদেষ্টা জুলিও স্কেরারা ইবারা, ১৩. পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী শওকত তারিন, ১৪. মালয়েশিয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী দাইম জয়নুদ্দিন, ১৪. ফিলিপাইনের পরিবহনমন্ত্রী আর্থার তুগাদে, ১৫. ফিলিপাইনের নির্বাচন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং সুশাসন সংক্রান্ত প্রেসিডেন্ট কমিশনের চেয়ারম্যান আন্দ্রেজ ডি. বাতিস্তা, ১৬. কাজাখাস্তানে নিযুক্ত ফিলিপাইনের কনসাল এবং ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের সহযোগী ব্যবসায়ী ডেনিস, ১৭. শ্রীলঙ্কার পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনবিষয়ক সাবেক উপমন্ত্রী নিরুপমা রাজাপাকসে।
আইসিইজে জানিয়েছে, প্যানডোরা নথি হয়তো এই নেতাদের সরাসরি দোষী সাব্যস্ত করতে পারবে না। তবে এই প্রমাণ তাদের ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে লজ্জাজনক হতে পারে। কেন না, এসব রাষ্ট্রনেতা কোনো না কোনো সময়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। আর এখন তারা নিজেরাই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

(সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজে ১১ অক্টোবর ২০২১ প্রকাশিত)